চারিদিকে চলছে দেখো তেলের ছড়াছড়ি, তেলের পথে কেমন সবে খাচ্ছে গড়াগড়ি।
- আমাদের কাছে ওয়েবসাইট বানাতে দিন, আমাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের তেল মারার অভিজ্ঞতা!
- আপনি কি দেখতে কালো ? কোন ক্রিমেই কাজ হচ্ছে না ?
- কোন ব্যাপার না, আমরা আছি আপনার পাশে, আমাদের কাছে ওয়েবসাইট নিলেই আপনি হয়ে যাবেন ফর্সা।
- আপনার কি মাথায় টাক? অনেক চেষ্টা করেও মাথায় চুল গজাচ্ছে না ?
- কোন সমস্যা নাই, আমরা আছি আপনার পাশে, আমাদের কাছে ওয়েবসাইট নিলেই আপনার মাথা চুলে ভরে যাবে।
- আপনার কি বিয়ে হচ্ছে না, ম্যারেজ মিডিয়া তে বিজ্ঞাপন দিতে দিতে অস্থির অবস্থা ?
- কোন ব্যাপার না, আমরা আছি আপনার পাশে, আমাদের কাছে ওয়েবসাইট নিলেই আপনার বিয়ে হয়ে যাবে।
- আপনাকে কি স্যার বলে সম্মোধন করলে আপনার মনে লাড্ডু ফোটে ?
- নো প্রবলেম এতো দারুণ বিষয়, আমাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের স্যার বলে ডেকে মুরগী বানানোর অভিজ্ঞতা।
- আর কত ভাই ? আর কত ? সস্তায় নিম্নমানের হোস্টিং কিনে আর কত প্রতারিত হবেন ?
- সস্তার বিজ্ঞাপন দেখে আর কত বাশঁ খাবেন ? অন্য যায়গায় প্রতারিত হচ্ছেন আর ভালো ভালো কোম্পানি গুলোকেও খারাপ বলে বেড়াচ্ছেন, কেন ভাই ?
- ফোন করে জিগ্যেস করেন, আপনাদের অফিস কোথায় ? আপনারা কেমন সার্ভিস দেন ? আপনারা ভালো তো ?
- আচ্ছা আপনাদের কি মনে হয়, আমাদের এই প্রশ্ন করলে আমরা কি কখনো বলবো আমরা খারাপ ? আমরা তো বলবো আমরাই সেরা তাইনা ?
আর এই কম কত? কম কত? শুনতে শুনতে জিবন শেষ ! কেউ এটা বললো না ভাই ভালো মানের কোয়ালিটি সম্পন্ন টার কত খরচ পড়বে!
চারিদিকে চলছে দেখো
তেলের ছড়াছড়ি,
তেলের পথে কেমন সবে
খাচ্ছে গড়াগড়ি।
কেউবা মাজে খাঁটি সর্ষে
গুরুর চরণদেশে,
গুরু দেবের আশীর্বাদে
কাটবে জীবন হেসে।
অফিস পাড়ায় তেলাতেলি
নিত্য দিনের সূচী,
প্রমোশনটা আগে হবে
করলে কদমবুচি।
রাজনীতিতে তৈল মর্দন
চলছে দিবানিশি,
পাতিনেতার কপাল খুলে
থাকলে তেলের শিশি।
গাড়ি বাড়ি মিলে সবি
নেতার আশীর্বাদে,
খুন খারাবি মাফ হয়ে যায়
নেতার সিলটা কাঁধে।
থাকে যদি তেলের হাড়ি
ঘরের বউয়ে খুশি,
তেল মালিশের উপকারটা
তাইত মনে পুষি।
তেল মবিলে ভালো চলে
গাড়ির ইঞ্জিন চাকা,
তেলে চলে সমাজ সংসার
তাছাড়া সব ফাঁকা।
সত্য কথায় সাধু বেজার
নাইবা বলুক মুখে,
রপ্ত কর তেলবাজিটা
কাটবে জীবন সুখে।।
ওহ দুঃখিত, ভূলেই গিয়েছিলাম আমরা তো বাঙ্গালি তাইনা, আর এসব তো আমাদের জাতীয় অভ্যাস।
একদা এক তেলবাজ ছিল।
তেলবাজ হল সেই ব্যক্তি যে লাভের আশায় যাদের পিছনে তেল খরচ করলে লাভ হবে তাদেরকে তেল মারতে মারতে পিছলা বানাইয়া ফেলে তাতে করে তাকে বাদ দিয়ে তার প্রতিদ্বন্দিরা ঐ ব্যক্তিকে ধরার আগেই সে পিচলাইয়া যায় আর তেলবাজ কাঙ্খিত কলা খাইতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সফলতার চরম শিখরে আরোহন করে। তারপর থেকে সে নিজেই অন্যদের তেলদ্বারা নিজে পিছলা হয়ে যায়। এটা একটা চলমান পক্রিয়া। অথবা যে ব্যক্তি ভাল মন্দ নির্বিশেষে ঐ ব্যক্তির প্রসংশা করে যার কাছে তার স্বার্থ আছে সেই ব্যক্তিই তেলদান কারী ।
তেলবাজরা আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিরাজমান। যেমন ধরা যাক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি বিভাগের প্রতিটি শেসনেই থাকে কিছু তেলবাজ ছাত্র। তারা বিভাগের কিছু শিক্ষক আছে যারা তেল পেতে পছন্দ করে তাদের তেল মেরে মেরে তৈলাক্ত করে ফেলে। তাতে তাদের ফলাফল যোগ্যতার তুলনায় অনেক ভাল হয়। যে শিক্ষক তেলে তৈলাক্ত হতে পছন্দ করে সেই শিক্ষকও তেল মেরে প্রথম হইছে, তারপর শিক্ষক। যে তেল মারছে সেও একসময় শিক্ষক হয়ে তেলে তৈলাক্ত হবে। যারা তেলে তৈলাক্ত হয় তাদের আবার নীতি ভাল আছে। তারা কেবল উপযুক্ত একজনের তেলেই তৈলাক্ত হয়। ঐ উপযুক্ত একজনের মত যদি আরেকজন উপযুক্ত তেলারো ঐ শিক্ষককে তেল মারতে যায় তবে সে সেই শিক্ষককে ধরতে পারে না কারন প্রথম জনের তেলেই সে তৈলাক্ত হয়ে যায় তাই ২য় তেলারো ধরতে গেলেই পিছলাইয়া যায়। যে তেল মেরে শিক্ষককে তৈলাক্ত করতে পারে তাকে আবার অন্য কিছু ছাত্র তেল মারে। তাতে করে তাদের ফলাফলও ভাল হয়। এই পক্রিয়ায় একজন অযোগ্য ছাত্রও তেলের প্রভাবে প্রথম হয়ে শিক্ষক হয়ে যাচ্ছে। তেল মেরে যে শিক্ষক হলো সে তেল মারা ছাড়া আর কি শিখাতে পারবে তা আমার বোধগম্য নয়। এই তেল প্রক্রিয়ার জন্য সাধারন শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষা থেকে। এই পক্রিয়া এইভাবে চলতে থাকলে জাতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বড় বড় চিহ্ন যুক্ত প্রশ্ন। আমারা তেল দিতে শিখিনাই বলেই আমরা ছাত্র নেতা হতে পারিনা, পারি না ভালো ছাত্র হয়েও বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষক হতে।
এই তেল আপনি আমি ইচ্ছা করলেই মারতে পারি না। তেল মারার জন্য বিশেষ যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। যেমন তার কয়েকটা:
১। তেলবাজ হওয়ার ১ম শর্ত নিজের সম্মানবোধ এটা থাকতে পারবে না।
২। লজ্জা শরমের মাথা পানি দিয়ে ধুয়ে খেয়ে ফেলতে হবে।
৩। হয়ত টয়লেট পরিষ্কার করে দিতে হতে পারে এতে পিছপা হলে চলবে না।
৪। যাকে তেল মারবে তার যতটা সম্ভব কাছাকাছি থাকতে হবে।
৫। যত কষ্টের কাজই হোক আপনার করতে হবে কারন তার পরেই আপনার জন্য সফলতা অপেক্ষা করছে।
৬। মাঝে মাঝে নিজের প্রসংশাও করবে হবে। আমি এটা পারি, সেটা পারি ইত্যাদি বলতে হবে। যদিও অনেক কিছুই পারি না।
৭। অন্যদের দোষগুলো তুলে ধরে নিজেকে দুধে ধোঁয়া তুলসী পাতা হিসেবে জাহির করতে হবে।
৮। অন্য কেউ এসে যেন আপনার জায়জা দখল করতে না পারে সেজন্য এমন কিছু ফর্মূলা এপ্লাই করতে হবে যাতে অন্যরা খারাপ এটা ফুটে ওঠে।
ফেসবুকে আমরা : POPULAR HOST BD
আরো পড়ুন : ৫০০ টাকায় ওয়েবসাইট!